ভারতীয় হাইকমিশনারকে স্মারকলিপি দিয়ে তিনটি সংগঠন যা জানালো।
ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠনের পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান: পুলিশের বাধা ও প্রতিনিধি দলের অভিব্যক্তি
ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে বিএনপির তিনটি অঙ্গসংগঠনের যৌথ প্রতিবাদী পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদানের উদ্যোগে বাধা দেয় পুলিশ। রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রামপুরা ব্রিজে ব্যারিকেড দিয়ে পদযাত্রাটি আটকে দেওয়া হয়। পরে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্দেশে রওনা দেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা
যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, এবং ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে উত্থাপিত বিষয়সমূহ
স্মারকলিপি ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার কাছে জমা দেওয়া হয়। এতে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটে গভীর উদ্বেগ ও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, ভারতের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় প্রদান এবং পুনর্বাসন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ভারতীয় নীতিকে "অবজ্ঞাসূচক" উল্লেখ করে বলা হয়, বন্ধুত্বের ভিত্তি হওয়া উচিত জনগণের কল্যাণ।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২ ডিসেম্বর আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা। এতে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করা হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন ও ভিয়েনা কনভেনশন, ১৯৬১-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে তুলে ধরা হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকায় সমালোচনা
স্মারকলিপিতে ভারতীয় কিছু উগ্র মিডিয়া ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, "সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধ করতে এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের প্রচার নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।"
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের প্রত্যাশা
স্মারকলিপিতে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়। জাতিসংঘ সনদের নীতির আলোকে বন্ধুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
পদযাত্রার প্রেক্ষাপট
এর আগে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই সেখানে জড়ো হন এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তবে রামপুরা ব্রিজে পুলিশ পদযাত্রাটি আটকে দেয়, যার ফলে নির্ধারিত কর্মসূচি স্থগিত করে প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি প্রদান করে।