যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস সদস্য দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেছেন, তারা যেন নতুন কোনো মুদ্রা চালু না করে যা মার্কিন ডলারকে প্রতিস্থাপন করতে পারে। বিশ্ববাণিজ্যে ডলারের প্রভাব কমিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে অন্য কোনো মুদ্রা ব্যবহারের প্রচেষ্টা গ্রহণ করলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লিখেছেন, "আমরা এসব দেশের কাছ থেকে একটি স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি চাই যে, তারা এমন কোনো ব্রিকস মুদ্রা তৈরি করবে না, যা শক্তিশালী মার্কিন ডলারকে প্রতিস্থাপন করতে পারে। যদি তারা এই প্রতিশ্রুতি দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে।"
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস সদস্য দেশগুলোকে আরও কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন, যদি তারা তাঁর নির্দেশনা উপেক্ষা করে, তবে তাদের ‘যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্য বিক্রির দিন শেষ’ বলে ধরে নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, "তারা তাদের পণ্য শুষে নেওয়ার জন্য আরেকটি দেশ খুঁজে বের করতে পারে।"
গত ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া এই রিপাবলিকান প্রার্থী ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, শিল্প উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনতে তিনি আমদানি পণ্যের ওপর ১০ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। চীনের পণ্যের ক্ষেত্রে এই শুল্ক হবে অন্তত ৬০ শতাংশ।
চীন ব্রিকস জোটের অন্যতম সদস্য। ব্রিকসের অন্যান্য প্রাথমিক সদস্য দেশগুলো হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০২৩ সালে ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও ইথিওপিয়া ব্রিকসে যোগ দেয়।
ট্রাম্প লিখেছেন, "আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্রিকস মার্কিন ডলারকে প্রতিস্থাপন করবে—এমন কোনো সুযোগ নেই। কোনো দেশ যদি এমন চেষ্টাও করে, তবে তাদের যুক্তরাষ্ট্রকে বিদায় জানাতে হবে।"
ব্রিকসের বেশ কিছু সদস্য দেশ ইতিমধ্যেই বিশ্ববাণিজ্যে ডলারের প্রভাব কমাতে উদ্যোগ নিচ্ছে। বিশেষ করে চীন তার মুদ্রা ইউয়ানকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করার চেষ্টা করছে। রাশিয়া ও ভারতও তাদের নিজস্ব মুদ্রার ব্যবহার বাড়াতে চায়।
ব্রিকসের মধ্যে একটি নতুন মুদ্রা তৈরির আলোচনাও হয়েছে, যদিও তা তেমন অগ্রগতি পায়নি। এই প্রেক্ষাপটেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি সামনে এলো। জানুয়ারি মাসে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।